ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা যৌথভাবে করোনার যে টিকা তৈরি করছে তার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল স্থগিত করা হয়েছে। একজন ভ্যাকসিন গ্রহীতা অসুস্থ হয়ে পড়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে যে ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তার অসুস্থতার ধরন সম্পর্কে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
এই ঘটনাকে ব্যাখ্যাযোগ্য নয় এমন অসুস্থতা হিসেবে উল্লেখ করে রুটিনমাফিক ভ্যাকসিনের ট্রায়াল স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাস্ট্রেজেনেকা।
করোনার যত টিকা নিয়ে কাজ হচ্ছে এর মধ্যে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিনটিই সবচেয়ে বেশি সাড়া জাগিয়েছে। এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। আশা করা হচ্ছিল, প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল শেষে তৃতীয় ধাপও সফলভাবে পার করে বাজারে আসবে করোনার এই ভ্যাকসিন।
কয়েক সপ্তাহ আগেই তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু করে অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় ৪২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী এতে অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ১০ হাজার এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে এটি পুশ করবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এদিকে, ব্রাজিলেও ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নির্বাচন করা হয়েছে।
গত ২ জুন দেশের ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে অক্সফোর্ডের তৈরি করোনার এই ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের অনুমোদন দেয় ব্রাজিল সরকার। স্বেচ্ছাসেবী নির্বাচন করার কাজও শেষ হয়েছে সেখানে। তবে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিকভাবে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের যে ট্রায়াল চলছিল তার সবগুলোই আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র। তিনি বলেন, বিশাল পরিসরে ট্রায়ালের ক্ষেত্রে অনেক সময় ভ্যাকসিন গ্রহণকারী অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তবে নিরাপদভাবে এটি যাচাই করে দেখতে হবে।
তবে এটিই প্রথম নয়। এর আগেও একবার অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল স্থগিত করা হয়েছিল। বড় পরিসরে ভ্যাকসিনের পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ ঘটনা খুব সাধারণ। যে কোনো সময় এমন ঘটনা ঘটতে পারে। অনেক সময় ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর দেহে তীব্র প্রতিক্রিয়ার কারণে তাকে হাসপাতালেও ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।
এ ব্যাপারে অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনার এই ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির অসুস্থতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার আগ পর্যন্ত সব জায়গায় এর ট্রায়াল বন্ধ থাকবে।
ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার তথ্য জানার পর ট্রায়াল শুরু করতে চাইলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতি লাগবে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
Leave a Reply